অনলাইন মার্কেটিং এ যারা নতুন আসতে চায় তাদের মধ্য থেকে
প্রায়ই একটা প্রশ্ন পাই যে, সোস্যাল নেটওয়ার্কিংএর এই যুগে ইমেইল মার্কেটিং কি
এখনও কাজ করে? আমার উত্তর সবসময় হ্যা, এবং বেশিভাগ ক্ষেত্রে তা সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
এর চেয়েও বেশি কার্যকর হয়। আমার আজকের পোস্টটি ঠিক এই বিষয় নিয়েই লিখা হয়েছে।
ইমেইল মার্কেটিং যে এখনও বহুলভাবে প্রচলিত তা আপনি সহজেই
বুঝতে পারবেন যদি আপনি নিয়মিত ইমেইল এবং ইন্টারনেট ব্যাবহার করে থাকেন। ইমেইল মার্কেটিং
এখনও পুরোপুরি কার্যকর এবং ভবিশ্যতেও এর কার্যকারীতা বন্ধের কোনো লক্ষন নেই। প্রতি
মিনিটেই সারা বিশ্বে ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটিরও বেশি ইমেইল আদান প্রদান হয়ে থাকে। এ থেকে
সহজেই বোঝা যায় যে কোম্পানি এবং সকল ধরনের কাস্টমার এখনও খুব ভালোভাবেই ইমেইল ব্যাবহার
করে থাকেন।
ভবিশ্যতেও যে ইমেইল মার্কেটিং এমনটাই জনপ্রিয় থাকবে সেই
যুক্তির পিছনে কিছু কারন আমরা এখানে তুলে ধরলাম:
১. সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর চেয়ে ইমেইল মার্কেটিংএ রয়েছে বিশেষ সুবিধা
ইমেইল মার্কেটিং এখন আর তেমন জনপ্রিয় নয়, এ ভুল ধারনার
প্রধান কারন হলো সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা। হ্যা, স্যোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
দিয়ে বেশ সফলতার সাথে মার্কেটিং করা সম্ভব তবে শুধু এক ধরনের মার্কেটিং দিয়ে কখনোই
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যায় না এবং সবার কাছে পৌছানো যায়না। এ বিষয়ে সব সফল কোম্পানিও
অবগত রয়েছে।
আমরা বর্তমানে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে অনেককেই
দেখতে পাই বিভিন্ন স্প্যাম জাতীয় কৌশল অবলম্বন করতে যেমন, ফেসবুক পেজে সবসময় অপ্রোয়জনীয়
নানা বিষয় পোস্ট করে সবার সামনে আসা, টুইটারে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় অটোমেটিক টুইট, অটোমেটিক
ম্যাসেজ এবং বর্তমানে বহুল প্রচলিত মেম (Meme) শেয়ার করে জনপ্রিয়তা পাওয়া। এ সবগুলোই
ব্যাবসার জন্য ক্ষতিকর এবং তা কাস্টমার হারানো ছাড়া আর তেমন কিছু করে না।
অপরদিকে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আগ্রহী কাস্টমার এবং
সাবস্ক্রাইবারদের কাছে গুরুত্বপূর্ন ও প্রয়োজনীয় কনটেন্ট শেয়ার করা যায় খুব সহজেই।
ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৯০% ব্যাবহারকারী ইমেইল ব্যাবহার করে থাকেন
অপর দিকে শুধুমাত্র ৭০% ব্যাবহারকারীরই সেস্যাল মিডিয়া একাউন্ট আছে। এদিক থেকেও ইমেইল
মার্কেটিং সর্বোচ্চ সংখ্যক কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মূল ভিত্তি।
কাস্টমার তৈরি করা, কাস্টমারের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি
এবং প্রোডাক্ট বিক্রির ক্ষেত্রে ইমেইল মার্কেটিং এখনও মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহৃত
হয়। যদিও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কোম্পানির সাথে কাস্টমারের অনেকটা সরাসরি সম্পৃক্ততা
সম্ভব হয়, তবুও ইমেইল আর সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিংকে একে অপরের সাথে তুলনা করা আর আপেল
ও পেয়ারা তুলনা করা একই কথা।
২. এটি ধীরে ধীরে আরও পরিপক্ক হচ্ছে
ইমেইল মার্কেটিং বেশ সময় ধরে প্রচলিত আছে এবং এই লম্বা
সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে ইমেইল মার্কেটিং সেক্টরটি ধীরে ধীরে আরও পরিপক্ক ও কার্যকর হয়ে
উঠছে। ইমেইল নিউজলেটার থেকে শুরু করে কোনো প্রোডাক্টের প্রমোশন পর্যন্ত সবকিছু সম্পর্কিত
বিভিন্ন ডাটা এখন কোম্পানিগুলো বেশ সহজেই দেখে সেই অনুযায়ী কাস্টমার সম্পৃক্ততা বাড়াতে
পারে। সাম্প্রতিক নতুন টেকনোলজিগুলোও ইমেইল মার্কেটিং এ ব্যাপক সহায়তা করবে তার প্রমান
পাওয়া যায়। শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইমেইলের ব্যাবহার হ্রাস পাবে এবং ব্র্যান্ড
বা কোম্পানিরে ক্ষেত্রে কার্যকর ক্রস চ্যানেল এক্সপিরিয়েন্স প্লাটফর্ম তৈরিতে সহায়তা
করবে। স্মার্ট ঘড়ি বা এ যাতীয় অন্যান্য ডিভাইসের কল্যানে ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে
এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খূলে যাবে এছাড়া মোবাইলে ইমেইল এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে
সাথে আরও ভালো ও ক্রিয়েটিভ কনটেন্ট তৈরির প্রয়োজনিয়তাও আরও বেড়ে যাবে যার ফলে স্বভাবতই
ইমেইল মার্কেটিং ভবিশ্যতে আরও কার্যকর হবে।
৩. সঠিকভাবে ব্যাবহার করতে পারলে ইমেইল মার্কেটিংই সবচেয়ে ফলপ্রসূ অনলাইন মার্কেটিং
যে সব মার্কেটার মনে করেন যে ইমেইল মার্কেটিং এখন আর কার্যকরী
না বা যারা ইমেইল মার্কেটিং করেও ব্যার্থ হয়েছেন তাদের বলতেই হবে যে তারা সঠিকভাবে
ইমেইল মার্কেটিং এর শক্তিকে ব্যাবহার করতে পারেন নি। সঠিক ও কার্যকর কৌশল জানা থাকলে
খুব সহজেই ইমেইল মার্কেটিং এ সফলতা পাওয়া সম্ভব। ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে
বড় সমস্যা হলো বেশিভাগ ইমেইলই না পড়া অবস্থায় ইনবক্সে জমা থাকে। এমনটা হলে তা হবে ইমেইলেরই
কারনে। ইমেইলটা এমন হতে হবে যা সহজেই কাস্টমারকে আকৃষ্ট করতে পারে এবং তার কাজে লাগে।
আকর্ষনীয় ইমেইল কনটেন্ট এর মাধ্যমে ইমেইল মার্কেটিং এর সর্বোচ্চ সুবিধা ইপভোগ করা সম্ভব। তাই কোম্পানির প্রসারের ইমেইল মার্কেটিং করার এখনই অন্যতম সময়।
0 টি মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন